article

বাণিজ্য থেকে ই-বাণিজ্যে

বাণিজ্য-থেকে-ই-বাণিজ্যে

দেশে গত কয়েক বছরে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজনির্ভর বাণিজ্যের হার বেড়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশেই রয়েছে নানা রকম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ। ই-ক্যাবের সদস্যসংখ্যা বতর্মানে ৭২১।

 

ই-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর ধরেই ঢাকা ও এর বাইরে ই-কমার্সের ক্রেতা ও গ্রাহক বেড়েছে। ঢাকার বাইরে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সমিতি হিসেবে ই-ক্যাব আরও বড় হয়েছে।

বাণিজ্য থেকে ই-বাণিজ্য (বিজনেস টু ই-বিজনেস) বিষয় নিয়ে ৭ থেকে ১৩ এপ্রিল পালিত হলো ই-কমার্স সপ্তাহ। ৭ এপ্রিল পালন করা হয় ই-কমার্স দিবস। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ই-ক্যাব এর আয়োজক।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশে ই-কমার্সের প্রসার আরও বাড়বে। ভবিষ্যতে দেশের বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর একটা বড় অংশ ই-বাণিজ্যের আওতায় চলে আসবে-এমনটাই মনে করছেন ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার। তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোয় ই-কমার্স খাতের ব্যাপ্তি তৈরি পোশাক খাতকেও ছাড়িয়ে যাবে।’

 

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ বললেন, ‘দেশের ই-কমার্স খাতের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। সারা দেশে ই-কমার্সবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে চাই। এ জন্যই ই-কমার্স সপ্তাহের আয়োজন করছি। দেশের প্রায় ৭০ লাখ নিবন্ধিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যবসায় রূপান্তর এখন সময়ের দাবি।’

 

ই-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী দেশে ই-কমার্স খাতের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দেশে ই-কমার্স খাতে ওয়েবসাইটভিত্তিক এক হাজারের বেশি উদ্যোক্তা এবং ফেসবুক পেজনির্ভর এফ-কমার্সে ৫ হাজার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উদ্যোক্তা রয়েছেন। এই খাতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করে। প্রতিবছর খাতটিতে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকায় আগামী কয়েক বছরে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

 

সম্প্রতি কেইমু ডটকম প্রকাশিত বাংলাদেশের ই-কমার্স ট্রেন্ড শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতে লেনদেন প্রতিবছর ১০ শতাংশ করে বাড়ছে। ই-কমার্সের ক্রেতারা মূলত শহরকেন্দ্রিক। ৮০ শতাংশ ক্রেতা ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের। এর ঢাকায় ৩৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৩৯ শতাংশ এবং গাজীপুরে রয়েছেন ১৩ শতাংশ। অন্য দুটি শহর হলো নারায়ণগঞ্জ ও সিলেট। ৭৫ শতাংশ ই-কমার্স ক্রেতার বয়স ১৮ থেকে ৩৪ বছর। ৯৫ শতাংশ ভোক্তা এখনো সরবরাহের পর দাম পরিশোধ বা ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতি বেশি পছন্দ করেন।

 

কথা হচ্ছিল অনলাইনে প্রযুক্তি পণ্য বিক্রি করেন এমন প্রতিষ্ঠানের এক কমকর্তার সঙ্গে। তিনি বললেন, এই খাতের বড় সমস্যা হচ্ছে আস্থার অভাব। এ ছাড়া রয়েছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সংকট। একজন ৫০ হাজার টাকা দামের ল্যাপটপ অনলাইনে ফরমাশ দেবেন, এরপর সেই টাকা অগ্রিম পরিশোধ করার ক্ষেত্রে নানা চিন্তা তাঁর মাথায় আসবে। কেউ কেউ পণ্যের মান ঠিক রাখেন না। ফলে ক্রেতারা অনলাইন কেনাকাটায় আস্থা রাখতে পারেন না। এ ছাড়া এই খাতের এখনো নীতিমালা নেই।

 

আবদুল ওয়াহেদ জানান, ই-ক্যাব ইতিমধ্যে সরকারকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ই-কমার্স নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে। এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ পোস্ট অফিস ই-পোস্টের লজিস্টিক পার্টনার হওয়ায় ই-পোস্ট দেশের গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত প্রোডাক্ট ডেলিভারির নিশ্চয়তা প্রদান করবে বলে জানান তিনি।

 

ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলছেন, জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের বয়ে আনতে ‘ডিজিটাল অর্থনীতি’ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা যাবে না। ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ শুধু তখনই সম্ভব হবে, যখন সারা দেশের মানুষকে ডিজিটাল সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *